জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই ২০২৩

একজন নাগরিকের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো তার জন্ম নিবন্ধন। কারণ একটি দেশের নাগরিক হতে হলে অবশ্যই তার জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে। কারণ একজন নাগরিকের পরিচয় পেতে হলে অবশ্যই সরকারের কাছে তার তথ্য থাকতে হবে। একজন নাগরিকের পরিচয় পাওয়া যায় তার জন্ম নিবন্ধন। প্রতিটি দেশেই তাদের দেশের জনগণের জন্ম এবং মৃত্যুর হিসেব রাখা হয়। তেমনি ভাবে আমাদের দেশে জনগণের যাবতীয় তথ্য নিশ্চিত করার জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রদান করা হয়ে থাকে।

একটি শিশুর জন্মের পরেই তার জন্ম নিবন্ধন করা হয়। বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন পদ্ধতি অনলাইন ভিত্তিক হয়েছে। তাই আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিনা তা খুব সহজেই চেক করে নিতে পারবেন। অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন চেক করার জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। এর মধ্যে আপনি আপনার জন্ম তারিখ দিয়ে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে পারবেন।

অনলাইনে জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সকল নিয়ম আপনারা আমাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন। আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সকল নিয়ম গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরব। আশাকরি আপনারা আমাদের এখান থেকে জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার সকল তথ্য জানতে পারবেন।

জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার পদ্ধতি

বর্তমান যুগের সকল তথ্য অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় আপনি ঘরে বসে খুব সহজে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জন্ম তারিখ দিয়ে আপনার জন্ম নিবন্ধন চেক বা যাচাই করতে পারবেন। কারণ বর্তমান সময়ে সকল ক্ষেত্রেই জন্মনিবন্ধনের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম থেকে শুরু করে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি ছাড়াও অন্যান্য কাজে জন্ম নিবন্ধন এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে।

আপনি খুব সহজে ঘরে বসে জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। তবে বলে রাখা ভালো শুধু জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করা যায় না। এক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট ঘরে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করতে হয়। জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার পদ্ধতি হলো:

  • জন্ম তারিখ দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য প্রথমে আপনাকে http:// everify.bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
  • এর পরে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য ১৭ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি নির্দিষ্ট ঘরে লিখতে হবে।
  • দ্বিতীয় ঘরে আপনাকে আপনার জন্ম তারিখ লিখতে হবে। তবে জন্ম তারিখ লেখার সময় আপনাকে YYYY-MM-DD ফরম্যাটে জন্ম তারিখ লিখতে হবে। এই ফরমেট ছাড়া অন্য ফরম্যটে আপনি আপনার জন্ম তারিখ লিখলে সেটি ভুল হবে এবং সঠিক তথ্য আপনার সামনে উপস্থাপিত হবে না। তবে কোনো কারণে যদি এটি দেখতে ভুল করেন তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। দ্বিতীয় বার আপনি সঠিক ফরমেটে লিখতে আর সেটি ভুল হবে না।
  • এরপরে আপনার সামনে একটি ক্যাপচা কোড এর মতো দুটি সংখ্যা যোগ করে যোগফল একটি নির্দিষ্ট করে লেখার জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় আপনাকে সেই যোগফল লিখতে হবে। তবে কোনো কারণেই সেই যোগ ভুল করা যাবেনা। যোগফল ভুল হলে আপনার সামনে আপনি সঠিক তথ্য পাবেন না। তাই যোগ করার সময় খুব সতর্কতার সাথে দেখে বুঝে যোগফল নির্ণয় করতে হবে এবং নির্দিষ্ট ঘরে সে যোগফল লিখতে হবে।
  • এরপরে search লেখা বাটনে ক্লিক করলে আপনি আপনার সামনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য দেখতে পাবেন। আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য যদি অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে তাহলে সেটি আপনার সামনে উপস্থাপিত হবে। আর কোনো কারণে যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন এর সকল তথ্য অনলাইনে আপলোড না হয় তাহলে আপনার সামনে সেটি আসবে না।

  • উপরের এই নিয়মগুলো অনুসরণ করার মধ্য দিয়ে আপনি খুব সহজেই জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে আপনার অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কপির তথ্য যাচাই করতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই শুধুমাত্র জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করা সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন : কোড দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম ২০২৩

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না পেলে করণীয়

অনেক সময় দেখা যায় যে জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনলাইন যাচাই করার সময় অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের কোন তথ্য পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে অনেকেই রয়েছেন যারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান এবং ভাবেন যে তারা হয়তো আর কোনদিন অনলাইনে তাদের জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংযোজন করতে পারবেন না বা অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধন ডাউনলোড করতে পারবেন না। তাই আপনারা যারা অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে গিয়ে অনলাইনে তথ্য না পেয়ে হতাশ হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে, আপনাদের অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কপি যদি না পান তাহলে কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

কারণ অনলাইনে কোন কারণে যদি জন্ম নিবন্ধনের তথ্য না থাকে তাহলে নতুনভাবে তথ্য সংযোজন করার উপায় রয়েছে। এখন আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনলাইনে না পেলে আপনাদের যে কাজটি করতে হবে সেটি হল:

  • প্রথমে আপনাকে আপনার নিজ ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা সিটি /কর্পোরেশন এর জন্ম নিবন্ধন শাখায় যোগাযোগ করতে হবে এবং সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
  • প্রয়োজনে আপনি তাদের জন্ম নিবন্ধন অন্তর্ভুক্তির যে বই রয়েছে সেই বইয়ে আপনার তথ্য রয়েছে কিনা সেটি যাচাই করে নিতে হবে।
  • তাদের জন্ম নিবন্ধন অন্তর্ভুক্তির বইয়ে যদি আপনার তথ্য থাকে তাহলে আপনি তাদের মাধ্যমে অনলাইনে তথ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য অন্তর্ভুক্তির আবেদন করার পর নির্দিষ্ট সময়ের পরে আপনি অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা

অনেক সময় দেখা যায় অনেকে ব্যস্ততার মাঝে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কপি সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন এবং কোন কারণ নেই সেটি সংগ্রহ করা হয়ে ওঠেনি। তাই তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি আপনার জন্ম তারিখ এবং জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দ্বারা অনলাইনে খুব সহজে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এছাড়া যারা নতুনভাবে অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন তারা তাদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপির বর্তমান অবস্থা যাচাই করার জন্য http:// everify.bdris.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। ওয়েবসাইটে আপনি আপনার জন্ম তারিখ এবং জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনার জন্ম নিবন্ধন এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন সনদ কি কি কাজে লাগে

বর্তমান সময়ে সকল কাজ এখন অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। আর অনলাইনের মাধ্যমে যে কোন কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে জন্ম নিবন্ধন অথবা ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। তাই বিশেষ করে দেখা যায় যারা এখনো 18 বছর বয়সের নিচে রয়েছে অথবা ভোটার আইডি কার্ড হয়নি। তাদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সকল কাজ করা বাধ্যতামূলক। তাই বর্তমান সময় দেখা যায় যে সকল কাজের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন এর গুরুত্ব খুব বেশি।

তাই আপনাদের সকলের কাছেই জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি থাকা খুবই জরুরী। আপনারা আমাদের এখান থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ কি কি কাজে লাগে সে বিষয়গুলো জানতে পারবেন।

  • স্কুল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে
  • জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীর ক্ষেত্রে
  • বিয়ে নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে
  • পাসপোর্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে
  • জমি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য
  • ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য
  • ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য
  • গাড়ির লাইসেন্স করার জন্য
  • ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন(টিআইএন ) নাম্বার প্রাপ্তির জন্য
  • গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তির জন্য
  • গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য
  • ঠিকাদারী লাইসেন্স করার জন্য

উপরে উল্লেখিত সকল কাজের জন্য অবশ্যই আপনাকে জন্ম নিবন্ধন ফি প্রদান করতে হয়। তাই যারা এখনো অনলাইনে মাধ্যমে তাদের জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেন নেতারা যতদ্রুত সম্ভব আপনাদের এই জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে নিন। তাছাড়া আপনারা উপরের উল্লেখিত কাজগুলো করতে গিয়ে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

পরিশেষে সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে আশা করি আপনারা আমাদের এখান থেকে জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার পদ্ধতি সমূহ জানতে পেরেছেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসেই আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top